ব্লগ

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য : সাধু এবং চলিত ভাষার মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পার্থক্য নিচে দেওয়া হল।

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য

চলিত ভাষা

  1. চলিত রীতি পরিবর্তনশীল। যা ব্যকরণ অনুসরণ করে না।
  2. চলিত রীতিতে সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ সংক্ষিপ্ত।
  3. চলিত রীতিতে তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি শব্দের অধিক ব্যবহার হয়।
  4. চলিত রীতিতে ধ্বনি বৈশিষ্ট্য লঘু তরল।
  5. চলিত রীতি কৃত্রিমতা বর্জিত এবং বাচনভঙ্গি ও বাক্য রীতিতে স্বচ্ছল।

সাধু ভাষা

  1. সাধু রীতি সুনির্ধারিত ব্যাকরণ অনুসরণ করে চলে এবং এর কাঠামো সাধারণত অপরিবর্তনীয়, এর পদ বিন্যাস সুনিয়ন্ত্রিত ও সুনির্দিষ্ট।
  2. সাধু রীতি সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের এক বিশেষ গঠন পদ্ধতি মেনে চলে বলে চলিত ভাষার তুলনায় বিস্তারিত।
  3. সাধু রীতিতে তৎসম শব্দ বেশি ব্যবহার করা হয়।
  4. সাধু রীতির ধ্বনি বৈশিষ্ট্য গুরুগম্ভীর।
  5. সাধু রীতি কৃত্রিম এবং বাচনভঙ্গি ও বাক্য রীতিতে অস্বচ্ছল।

এগুলই হলো মূলত সাধু ও চলিত ভাষার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য ।

সাধুরীতি থেকে চলিত রীতিতে পরিবর্তনের কিছু সাধারণ সূত্র-

১। ক্রিয়াপদের মধ্যস্থিত “ই” স্বরধ্বনি লোপ পায়। যেমনঃ- খাইব – খাব, যাইব – যাব।

২। ক্রিয়াপদের মধ্যে যদি “উ” স্বরধ্বনি থাকে, তাহলে চলিত রীতিতে তা লোপ পায়। যেমনঃ- যাউক – যাক।

৩। পদের শেষে “অ”, “আ”, “ও” থাকলে পূর্ববর্তী “উ” স্বরধ্বনি “ও”-তে রূপান্তরিত হয়। যেমনঃ- উঠে – ওঠে।

৪। পদের শেষে “অ”, “আ”, “এ” থাকলে পূর্ববর্তী “আ” স্বরধ্বনি “এ”-তে রূপান্তরিত হয়। যেমনঃ- বিকাল – বিকেল।

৫। পূর্ববর্তী “ই” স্বরধ্বনির প্রভাবে চলিত রীতিতে “আ” ধ্বনি “এ”-তে রূপান্তরিত হয়। যেমনঃ- দিয়া – দিয়ে।

৬। পদের পূর্বে “উ/ু” থাকলে চলিত রীতিতে শেষের “আ” পরিবর্তিত হয়ে “ও” হয়। যেমনঃ- জুতা – জুতো।

বিভিন্ন পরিক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ এমসিকিউ।

১। “তৎসম” শব্দের ব্যবহার কোন রীতিতে বেশি হয়? [২৯-তম বিসিএস]
উত্তরঃ সাধু রীতি।

২। সাধু ভাষা সাধারণত কোথায় অনুপযোগী? [১৮-তম বিসিএস]
উত্তরঃ নাটকের সংলাপে।

৩। সাধু ভাষা ও চলিত ভাষার পার্থক্য[১৬-তম বিসিএস]
উত্তরঃ ক্রিয়াপদ ও সর্বনাম পদের রূপান্তরগত ভিন্নতায়।

৪। বাংলা ভাষায় “গুরুচন্ডালী দোষ” মানে হলো- [ঢাবি, গ-ইউনিটঃ ২০০৬-০৭]
উত্তরঃ তৎসম শব্দের সঙ্গে দেশি  শব্দের প্রয়োগ।

৫। সাধু ও চলিত রীতির মিশ্রণে বাক্য কোন দোষে দুষ্ট হয়? [চবি, ডি৩ ইউনিটঃ ২০১৬-১৭]
উত্তরঃ গুরুচণ্ডালী দোষ।

বিদ্রঃ এই তথ্য গুলো চাকরি, বিসিএস, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষাসহ যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া আপনাদের যেকোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানান। এবং ভুলে হলে তাও কমেন্টে বলতে পারেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button